চুনারুঘাটের অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গড়ে উঠেনি শহীদ মিনার বা স্মৃতিস্তম্ভ
আবুল কালাম আজাদ ঃ ভাষা শহীদ সালাম, বরকত, রফিক, জব্বার, শফিক ও অলিউল্লাহদের কথা গ্রামের কিশোররা জানুক বা না জানুক প্রতি বছর বাঁশ ও কলাগাছের তৈরি অস্থায়ী শহীদ মিনারে তারা ফুল দেয়। তরুণ-কিশোরদের সঙ্গে যোগ দেয় শিশুরাও। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা সারা রাত জেগে পরিশ্রম করে নিজেরাই বাঁশ কিংবা কলাগাছ দিয়ে তৈরি করে শহীদ মিনার। নানা রঙে নিজের হাতে সাজিয়ে তোলা এ শহীদ মিনারেই প্রভাতে ফুল দিয়ে ভাষা শহীদদের স্মরণ করা হয়। শুধু দেওরগাছ নয়, পুরো উপজেলায় কিশোর শিক্ষার্থীরা অসংখ্য অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানায়। মহান ২১শে ফেব্র“য়ারী রোবাবার উপজেলার দেওরগাছ ইউনিয়নের আমতলী আদর্শবাজার, মধ্য দেওরগাছসহ অনেক স্থানেই দেখা গেছে এমন অস্থায়ী শহীদ মিনার। উপজেলার পৌনে দুশ’ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার না থাকায় অনেক বিদ্যালয়েই অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে শিক্ষার্থীরা ফুল দিচ্ছে। উপজেলার অর্ধশতাধিক হাইস্কুল ও মাদ্রাসার মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি বিদ্যালয়ে রয়েছে শহীদ মিনার। যেখানে শহীদ মিনার নেই সেখানেই গড়ে তোলা হচ্ছে এক দিনের জন্য অস্থায়ী শহীদ মিনার। এছাড়া মাদ্রাসাগুলোতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কোনো ব্যবস্থা নেই। এমনকি কোনো উদ্যোগও নেই। জানা গেছে, উপজেলা সদরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ছাড়া চুনারুঘাট সরকারি কলেজ ও ৩-৪টি হাইস্কুল ছাড়া আর কোনো বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নেই। শহীদ মিনার নেই কোনো সরকারি কিংবা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। ভাষা শহীদদের স্মরণে প্রভাতফেরি এবং শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানানোর সংস্কৃতি চুনারুঘাটে চালু হয়েছে যুগ যুগ আগে থেকেই। বর্তমানে জনসংখ্যা বেড়েছে, বেড়েছে শিক্ষার্থী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেই অনুপাতে গড়ে উঠেনি কোনো শহীদ মিনার। ২১শে ফেব্র“য়ারি মহান ভাষা দিবস এখন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত এবং বিভিন্ন দেশে পালিত হলেও দেশের গ্রামাঞ্চলের শিশু-কিশোররা এখনও জানে না ভাষা দিবসের ইতিহাস। প্রাথমিকে পাঠ করে যেটুকু জানানো হয়, এর বাইরে জানানোর নেই কোনো সুযোগ। তারপরও চুনারুঘাটের কিশোর শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন পেশার তরুণরা ভাষা দিবসের দিন তাদের স্মরণে ফুল দেয় শহীদ মিনারে। চুনারুঘাট উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি হাটবাজার ও গুরুত্বপূর্ণ স্থানে রোববার এ দিবসটি পালন করে তরুণরা। তারা স্থানীয়ভাবে চাঁদা তুলে আয়োজন করে দিনব্যাপী নানা অনুষ্ঠানের।
Share on Facebook
Leave a Reply