কিবরিয়া হত্যা মামলায় জিকে গউছের জামিন

নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা
স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এএমএস কিবরিয়া হত্যা মামলায় কারাবন্দী বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সমবায় বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক, পৌর সাময়িক বরখাস্তকৃত মেয়র আলহাজ্ব জিকে গউছকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ দস্তগীর হোসেন ও বিচারপতি মোঃ আতাউর রহমান খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার জামিন দেন। আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবি খন্দকার মাহবুব হোসেন ও সাবেক আইনমন্ত্রী মওদুদ আহমেদ। এর পূর্বে চলতি বছরের ২৮ ফেব্র“য়ারী এক আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট জিকে গউছকে কেন জামিন দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। এ রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে গত বৃহস্পতিবার তাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। এদিকে জিকে গউছের জামিনের খবর হবিগঞ্জে ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে প্রাণ চাঞ্চল্যতা দেখা যায়।
অনেক নেতাকর্মীই জামিনের বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছিল সরব উপস্থিতি। তবে হত্যা মামলায় জামিন হলেও বিস্ফোরকসহ আরো দুটি মামলা রয়েছে জিকে গউছের উপরে। ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারী হবিগঞ্জ সদরের বৈদ্যের বাজারে ঈদ পরবর্তী এক জনসভা শেষে বের হওয়ার পথে গ্রেনেড হামলার শিকার হন সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। পরে ঢাকা নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনার পর হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের তৎকালিন সাংগঠনিক সম্পাদক বর্তমানে ঝেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমপি আবদুল মজিদ খান হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি সিআইডির এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান মামলাটি তদন্ত করে ১০ জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২০ মার্চ অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এরপর সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আদালতের নির্দেশে সিআইডির সহকারী পুলিশ সুপার রফিকুল ইসলাম এ মামলার অধিকতর তদন্ত করে ২০১১ সালের ২০ জুন আরও ১৪ জনকে আসামি করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। আগের আসামিদেরও আসামী রাখা হয়। কিন্তু ২০১১ সালের ২৮ জুন কিবরিয়ার স্ত্রী আসমা কিবরিয়া অভিযোগপত্রের উপর হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে নারাজি আবেদন করেন। ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারি নারাজি আবেদন গ্রহণ করে সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। এ আদেশের পরিপ্রেক্ষিতে সিআইডির এএসপি মেহেরুন নেছা ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আলাহাজ্ব জিকে গউছ এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১১ জনের নাম যোগ করে কিবরিয়া হত্যা মামলার সংশোধিত সম্পূরক অভিযোগপত্র জমা দেন। নতুন আসামিদের নিয়ে এ মামলায় আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৫ জনে। ২০১৪ সালের ২১ ডিসেম্বর ওই ১১ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারী পরওয়ানা জারি করেন আদালত। পরোয়ানা জারির পর একই বছরের ২৮ ডিসেম্বর হবিগঞ্জের বিচারিক আদালতে মেয়র জিকে গউছ আত্মসমর্পণ করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। সেই থেকে তিনি কারাবন্দী রয়েছেন। প্রথমে হবিগঞ্জ এরপর মৌলভীবাজার ও বর্তমানে সিলেট জেলা কারাগারে বন্দি আছেন জিকে গউছ। সবশেষ ২০১৫ বছরের ২১ সেপ্টেম্বর সিলেট দ্রুত বিচার আদালত জিকে গউছের জামিন না মঞ্জুর করেন। বিচারিক আদালতের এ আদেশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আবেদন করেন জিকে গউছ। বর্তমানে হত্যা মামলাটি সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন অবস্থায় রয়েছে। চলছে সাক্ষীদের সাক্ষ্য গ্রহণ।

Share on Facebook

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *